Header Ads

Header ADS

দেশের বাইরে পড়শোনা-Higher study abroad




দেশের বাইরে পড়শোনা-Higher study abroad bangladesh

প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি নিজের সামান্য জ্ঞান নিয়ে এই লেখাটা লেখার মত সাহস দেখানোর জন্য। এই লেখাটা আমার সামান্য ধারণা থেকে লেখা, যতটুকু আমি জানি। আমার থেকে অন্য কেউ অবশ্যই ভালো ধারণা রাখেন এই বিষয়ে বলার মত, তবে আমি আমার সামান্য জ্ঞান নিয়ে কিছু কথা লেখার চেষ্টা করবো।

দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে বুঝতে হবে আপনার জীবনের লক্ষ্য কি, কোনটা জরুরি, নিজেকে জানতে হবে আগে। আপনার জীবনের লক্ষ্য যদি হয় যে কোন সরকারি চাকরি তাহলে আপনার প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত চাকরির জন্য পড়াশোনা করবো। দেশের বাইরে পড়াশোনা পরেও করতে পারবেন, কিন্তু বয়স শেষ হলে আর অ্যাপ্লাই করতে পারবেন না।

আপনার লক্ষ্য যদি হয় দেশের বাইরে বসবাস করবেন, ক্যারিয়ার গড়বেন, বাংলাদেশের কোন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক হবেন, অথবা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করবেন তাহলে উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আর যদি হয় আপনাদের ফ্যামিলি ট্রেডিশন তাহলে আলাদা কথা।

দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে ভাবতে হবে আপনি আসলে কয়েক বছর পরিবার আর প্রেয়সী কে ছেড়ে দূরে থাকতে চান কিনা। যদি আপনার জীবনের লক্ষ্য, স্বপ্ন আর ইচ্ছা মিলে যায় তাহলে পরবর্তী ধাপের জন্য প্রস্তুতি নিন।

আপনি যে ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার জন্য যেতে চান সেই ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে গিয়ে এডমিশনের বিস্তারিত পড়ে নিন, উনাদের রিকোয়ার্মেন্ট অনুযায়ী আপনি অ্যাপ্লাই করতে পারবেন কিনা, তাদের সাথে আপনার প্রোফাইল ম্যাচ করে কিনা।
আপনার লক্ষ্য যদি হয় আমেরিকা, কানাডা বা প্রথম সারির ইউনিভার্সিটিগুলো তাহলে আপনার আন্ডারগ্রাজুয়েশন শেষ হওয়ার আগেই জিআরই/জিম্যাট দিয়ে ফেলুন। জিআরই/জিম্যাট এর মেয়াদ ৫ বছর। ভালো স্কোর পেলে অ্যাপ্লাই করার ২/৩ মাস আগে আইইএলটিএস/টোফেল দিয়ে ফেলুন। আইইএলটিএস/টোফেল এর মেয়াদ ২ বছর।

আপনি যখন থিসিস লিখবেন শেষ সেমিস্টারে সেইটা খুবই ভালো করে লিখুন। চেষ্টা করুন কপি না করে নিজের মত করে লেখার। রেফারেন্স দেওয়ার সময় অবশ্যই যে কোন একটা রেফারেন্স স্টাইল ফলো করবেন। এপিএ, হার্ভার্ড, এমএলএ, শিকাগো সহ অনেক স্টাইল আছে। গুগল মামাকে জিজ্ঞেস করলেই বলে দেবে।

আন্ডারগ্রাজুয়েশন শেষ হওয়ার আগেই একটা রিসার্চ পেপার লেখে ফেলুন। একটা রিসার্চ পেপার আপনাকে দেশের বাইরে স্কলারশিপ পেতে অনেক সাহায্য করবে। যদি সম্ভব হয় তাহলে রিসার্চ পেপার টা পাবলিশ করার চেষ্টা করুন। যদিও একটু কঠিন কাজ এইটা।

আপনার ডিপার্মেন্টে পিএইচডি করা যেনারা শিক্ষক হিসেবে আছেন উনাদের বলুন আপনার লক্ষ্যর কথা, বা যিনি রিসার্চ করেন এমন শিক্ষক। উনাদের পিছে লেগে থাকুন। গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড কে সময় দেওয়া কমিয়ে দিন, যদি আপনার মনে হয় সময় না দিলে সে চলে যাবে তাহলে এখনি সময় দেওয়া বন্ধ করুন, আপদ যত তাড়াতাড়ি বিদায় হয় ততই ভালো আপনার জন্য। কারণ সে আগে পড়ে ঠিকই চলে যাবে। সত্যি-ই ভালোবাসলে আপনার জন্য অপেক্ষা করবে। তাই এই সময় টা শুধু নিজেকে দিন, দুজনের ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করে।

আন্ডারগ্রাজুয়েশন যদি মাস্টার্স-এ অ্যাপ্লাই করার অনেক আগে শেষ হয়ে যায় তাহলে ছোট হোক বা কামলা বিক্রি করার মত হোক এমন একতা চাকরিতে জয়েন করুন। আপনার এক্সপেরিয়েন্স অনেক সাহায্য করবে অ্যাডমিশন এবং ফান্ডিং পেতে।
পারলে গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ডের সেবা না করে কিছুদিন ভলানটিয়ার অ্যাক্টিভিটি করুন। দেশের বাইরের শিক্ষকরা অনেক মূল্য দেয় এমন অ্যাক্টিভিটি থাকলে। এইটা আপনার এডমিশনের জন্য প্লাস পয়েন্ট হবে। সাথে কিছু এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটি যোগ করুন আপনার সিভিতে।

আপনার সিজিপিএ এডমিশনের জন্য কোন বড় বাধা হবে না, তবে যত গুড় তত মিঠা এই ব্যাপার টা। অ্যাডমিশন কমিশন আপনার পুরো প্রোফাইল দেখবে। আর হ্যাঁ, আপনি বাংলাদেশের কোন ইউনিভার্সিটিতে পড়েছেন এইটা-ও কোন ব্যাপার না; মজার বিষয় হলো বাইরে আসার পড়ে কেউ জিজ্ঞেস-ও করবে না এই বিষয়ে।

আপনার বর্তমান ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের সাথে খুবই ভালো আচরণ করুন, উনাদের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখুন, বিশেষ করে প্রোফেসর হিসেবে যেনারা আছেন। বাইরে অ্যাপ্লাই করার সময় ইউনিভার্সিটি অনুযায়ী ২/৩ টা রিকমেন্ডেশন লেটার লাগবে, যা আপনার ইউনিভার্সিটির প্রফেসর বা অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের কাছে থেকে নিতে হবে।

যে দেশে যাবেন সে দেশের ভাষা শিখুন, অগ্রাধিকার পাবেন অ্যাডমিশন বোর্ডে। অন্য একটা দেশের ভাষা জানা মানে আপনার সম্ভাবনা অনেক গুন বেড়ে যাওয়া, সেইটা হোক দেশে বা দেশের বাইরে; পড়াশোনা, চাকরি, ব্যবসার ক্ষেত্রে। চাইনিজ, স্প্যানিশ, জার্মান, রাশিয়ান, জাপানিজ বা অন্য যে কোন দুইটা ভাষা শিখে ফেলুন।

অ্যাপ্লাই করার আগে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষিত করুন। বাংলাদেশে অনেক এজেন্ট আছেন যেনারা লাখ টাকার বিনিময়ে এই কাজ গুলো করে দেন। দয়া করে উনাদের কাছে যাবেন না। আপনি একটু কষ্ট করে ইউটিউব বা গুগল-এ সার্চ দিন সব তথ্য পেয়ে যাবেন। নাহলে আশেপাশে অনেক বড় ভাই-বোন আছেন উনাদের জিজ্ঞেস করুন। অ্যাপ্লাই করাটা ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট করার মতই সহজ, কঠিন কিছুই না।

সর্বশেষ বলব, আগে নিজেকে জানুন। আপনি কী হতে চান, কেনো হতে চান। এইটা কি শুধু হুজুকে পড়ে চাচ্ছেন নাকি আপনার ক্যারিয়ারের জন্য দেশের বাইরের ডিগ্রি খুবই জরুরি। আপনার জন্য অনেক শুভ কামনা থাকলো।

বাংলা বানানে আমার যথেষ্ট দুর্বলতা আছে আমি তা স্বীকার করছি। বানান ভুল ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কোনো সাহায্য লাগলে ইনবক্স করতে পারেন। তবে আগে আপনার পরিচয় আর প্রশ্নগুলো করে রাখবেন; ব্যস্ততার জন্য রিপ্লাই দিতে দেরি হতে পারে তবে রিপ্লাই পাবেনই।
মন চাইলে লেখা শেয়ার করতে পারেন তবে নিজের নামে চালিয়ে না দিয়ে আমার নামটা রাখবেন, ধন্যবাদ।

রিয়াদ হাসান
হুবেই ইউনিভার্সিটি


Powered by Blogger.