Header Ads

Header ADS

তুই কি সেকেন্ড টাইমার, তাহলে লেখাটা তোর জন্যই | University Admission




তুই কি সেকেন্ড টাইমার, তাহলে লেখাটা তোর জন্যই | University Admission , Bangladesh

কিরে বসে আছিস কেনো? কি হয়েছে তোর? মন খারাপ? কেনো? অভিশাপ? তুই একজন সেকেন্ড টাইমার এইটা তোর জন্য অভিশাপ ভাবছিস? এইটা ভেবে বসে আছিস? খুবই ভালো তো; আচ্ছা আমাকে একটা কথা বলতো, এতগুলো দিন যে বসেছিলি কি পেয়েছিস? কেউ এসে তোর পড়া পড়ে দিয়ে গিয়েছে? তোর কষ্ট অন্য কেউ বুঝতে পেরেছে? নাকি তোর মন খারাপ এই জন্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি তোর জন্য সেকেন্ড টাইম চালু করেছে? একটাও না? তাহলে যখন কেউ তোর জন্য কিছু করেনি, তোর কষ্ট কেউ বোঝেনি তাহলে এখনো কি জন্য বসেই থাকবি? তুই কি বসেই থাকবি নাকি উঠে দাঁড়াবি?

আরে উঠে দাড়া; যা থাকে কপাল দেখা যাবে, শেষ না দেখে কেনো হাল ছেড়ে দিবি? আরে তুই তোর নিজেকে এইবার প্রমাণ করে দে, আর দুনিয়াকে শুনিয়ে দে তোর ব্যর্থতা থেকে সফল হওয়ার কাহিনি। কেন এই সুযোগ মিস করবি? কে কি বলল সে সব কানে নেওয়ার সময় নেই এখন। এখন নিজেকে মেলে ধরার সময়, নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছিস তুই, তাই সবাইকে দেখিয়ে দে তুই কী।

একটু পিছনের দিকে তাকা দেখ তোর বাবা-মা তোর সুদিন দেখার জন্য কত আগ্রহ আর স্বপ্ন নিয়ে বসে আছে। মনে রাখবি তোর বাবা মা এর মুখ শুধু তুই-ই উজ্জ্বল করতে পারবি অন্য কেউ না। প্রতিদিন পড়ার আগে উনাদের মুখের কথা চিন্তা করে পড়তে বসবি। তোর বাবা কে দেখ, জীবনের কত কষ্ট পারি দিয়ে এসেছেন এখনো দিচ্ছেন শুধু তোর জন্য। তোর মা কে দেখ, নিজের ইচ্ছা, চাওয়া-পাওয়া গুলো তোর কথা চিন্তা করতে গিয়ে ভুলেই গিয়েছেন। এখন সময় তোর নিজের জন্য নয় উনাদের জন্য হলেও তোকে কিছু করে দেখাতে হবে। তোর চোখটা বন্ধ কর আর মনেমনে কল্পনা কর, দেখ তুই ভালো কোন একটা ইউনিভার্সিটিতে চান্স পেয়েছিস, আর সেই খবর টা তোর বাবা-মা কে দিচ্ছিস; একটা বার কল্পনা কর উনাদের মুখের হাসি আর এই মুহূর্তের কথা। তুই এত খুশি হয়েছিস যে খুশিতে বলতেই পারছিস না, শরীরের সব পশম যেন জেগে গিয়েছে, কারণ আজ তুই তোর আর তোর মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছিস। তোর বাবা-মা কে নিজের একটা নতুন পরিচয় দিতে পেরেছিস, আজ থেকে তুই তাদের গর্ব; এক জীবনে আর কি লাগে বল? এই মুহূর্তের জন্য হলেও তোকে আজ থেকেই লড়তে হবে।

আরে জীবন টা অনেক ছোট, জীবনে যদি নিজের পরিচয় দিতে না পারিস তাহলে এর থেকে লজ্জার কি থাকতে পারে আমাকে বল। তোর আসে পাশে তাকা, দেখবি অনেক ছেলে-মেয়ে আছে যারা অপমানিত হতে হতে আজ সাফল্য পেয়েছে। জন্ম থেকে কেউ-ই মেধাবী হয় না। ধরলাম তুই মেধাবী না, তাতে কি? কঠোর পরিশ্রম কর। এইটা তো করতে পারবি, তাহলে তোকে কেউ আটকাতে পারবে না, কাগজ কলমে লেখে রাখ। তবে হ্যাঁ, তুই যদি প্রেমের ক্ষেত্রে পরিশ্রম করিস তাহলে কাজ হবে না। সময় অনেক কম তাই প্রেম করে সময় নষ্ট করিস না। কয়েক মাসের জন্য প্রেম বাদ দে। যেই ছেলে/মেয়ের কথা মনে মনে ভাবতিস তার চিন্তা আজ থেকে আর করবি না।
আপাতত সব কিছু বন্ধ করে দে, কয়েক মাসের জন্য দুনিয়ার মুখ দেখবি না পরে ইউনিভার্সিটিতে চান্স পেয়ে সারা দুনিয়া ঘুরে বেড়াবি। যদি ভাবিস কথা না বললে প্রেমিক/প্রেমিকা অন্য কারো হাত ধরে চলে যাবে, তাহলে এখনি তার সাথে প্রেম করা বন্ধ করে দে। কারণ সে আগে পরে ঠিকই চলে যাবে। তাহলে কেনো তার জন্য তোর জীবনটা অবহেলাতে থাকতে দিবি? তাকে পাওয়া যদি এত কঠিন হয় তাহলে তুই কেনো নিজেকে এতটা সস্তা করবি?

আর শোন নিজেকে কখনো অন্য কারো সাথে তুলনা করবি না, তুই যা তাই-ই। এখন থেকে তোর একটাই কাজ নিজেকে ছাড়িয়ে যাবি প্রতিদিন। এর জন্য পড়তে হবে, বলবি ভাইয়া পড়তে ইচ্ছে করে না, তাইতো? আরে আমারও পড়তে ইচ্ছে করে না আমিও তোর মতই ফাঁকিবাজ। তবে তোকে একটা বুদ্ধি শিখিয়ে দেই; প্রথম দিন ১০ পেজ পড়বি, পরের দিন ১১ পেজ, এইভাবে বাড়ানোর চেষ্টা করবি, আগে পড়ার অভ্যাসটা করে ফেল। এখন চিন্তা কর ২৪ ঘণ্টার মধ্য ৮ ঘণ্টা ঘুমাবি, ৮ ঘণ্টা ঘুররি, আর ৮ ঘণ্টা পড়াশোনা করবি। যেই ৮ ঘণ্টা পড়াশোনা করবি সেই ৮ ঘণ্টা সব কিছু থেকে নিজেকে দূরে রাখবি।

আর হ্যাঁ, একটা ভুল কিন্তু তুই করিস, প্রথম দিনই ১৪-১৬ ঘণ্টা পড়াশোনা করতে চাস, এইটা করিস না। তোর কোন ভাই/বোন/বন্ধু কত ঘণ্টা পড়াশোনা করছে এইটা জেনে বা শুনে তোর তো কোন লাভ নেই। তাই এই কাজ টা বাদ দিবি আজ থেকেই। প্রতিদিন থাকবে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুধু এই একটা কথা মনে রাখবি, তোর মূল্যবান সময়কে অন্যের কথা ভেবে নষ্ট করবি না?

আচ্ছা তোর কী মনে আছে বড়রা বলতেন যে ৮ ঘণ্টা পড়াশোনা করলে আর কিছু লাগে না? মনে পরেছে? তাহলে এখন নিজের দিকে তাকা, তুই কিন্তু এখন প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা করে পড়ছিস, এই পর্যায়ে আসতে হয়ত তোর ২০-২২দিন লেগেছে। এখন নিজে চিন্তা কর, তুই যদি কিছু সময় বাইরে ঘুরাঘুরি আর ঘুম একটু কমিয়ে দিস তাহলে প্রতিদিন কতটা সময় পড়া যেতে পারে। নিজের স্বপ্ন আর ইচ্ছা পূরণ করার জন্য আর একটু কি পড়াশোনা করা যায় না?

দেখ, আগে যা হয়েছে তা ভুলে যা। শত চিন্তা করলে-ও তো আগের সময়, সুযোগ পাবি না, কিন্তু কিছু ইউনিভার্সিটিতে তোর জন্য আবার সুযোগ রেখে দিয়েছে। তাহলে এই সুযোগ কেনো অবহেলাতে ফেলে রাখবি তুই? এতটা বোকা তো তুই না। তাই উঠে দাড়া আর নিজের মন কে বল আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব; এইবার অনেক সেকেন্ড টাইমার চান্স পাবে তাহলে কেনো তুই তাদের মাঝে একজন না?

সর্বশেষে বলব, সেকেন্ড টাইম কোন অভিশাপ না, সেকেন্ড টাইম নিজেকে প্রমাণ করবার সুযোগ, আর সেকেন্ড টাইমাররা সব থেকে বেশি চান্স পায় যেখানে সেকেন্ড টাইম দেওয়ার সুযোগ থাকে। আচ্ছা, মা-বাবার মুখের হাসি ফুটানোর কথা টা মনে আছে তো তোর? এইটা কিন্তু শেষ সুযোগ মিস করিস না, দুনিয়াকে আর একবার দেখিয়ে দে, পুরো দুনিয়া তোর সাফল্য দেখার জন্য অপেক্ষা করছে; কি অন্তত সর্বোচ্চ চেষ্টা করবি তো?


তোর সফলতার বীজ এখনই বপন কর, তোর জন্য অনেক দোয়া আর শুভ কামনা থাকলো।
Powered by Blogger.